নিজস্ব প্রতিনিধি,রামগঞ্জ কন্ঠ,১৫জুনঃ লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও বরিশাল মহা-সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয়ে মেসার্স মাইন উদ্দিন রাশী লাইসেন্স এর নামে কাজ করছেন ইস্কান্দার মির্জা শামীম। লক্ষ্মীপুর শহর থেকে মজু চৌধুরীর হাট পর্যন্ত এ সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ (একশো) কোটি টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ন্যায় এ সড়কে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাজের গুণগত মান ২০%ও হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। এ প্রতিবেদক গতকাল সোমবার এ প্রকল্পের ১০ কি.মি. এলাকা ঘুরে প্রত্যক্ষ করেছেন নানা অনিয়মের দৃশ্য। কোথাও সড়ক অধিদপ্তরের কোন কার্যসহকারী, শাখা প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে চলমান নির্মাণ কাজের তদারকি করতে দেখা যায়নি।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও বরিশাল মহাসড়ক এর লক্ষ্মীপুর অংশের ১০ কি.মি. ৩৬ ফিট চওড়া এ সড়কের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০০(একশো) কোটি টাকা। নির্মাণ কাজের শিডিউলে উল্লেখ আছে, বালু ভর্তি(ফিলিং) করে যান চলাচল এবং যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পুরানো লেন মিলিয়ে কাজ করতে হবে, কিন্তু তা মোটেই করা হয়নি। খোয়া এবং বালু দিয়ে সাববেইজ করতে হবে। সাববেইজের অনুপাত হবে ৭০% খোয়া ও ৩০ % বালুর সংমিশ্রণে। কিন্তু, এখানে সিলেক সেন্ট না দিয়ে ভিটি বালু এবং নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পাথর মেগাডম ৮০% যা আমদানীকৃত (কালোপাথর) এবং ২০% সিলেক সেন্ট দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও এখানে আমদানিকৃত পাথরের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে না সিলেক সেন্ট এরও। বেইজ-২ ইটের মেগাডম ৮০% খোয়া এবং ২০% সিলেক সেন্ট দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও এখানে নিম্নমানের ইটের খোয়া এবং ভিটি বালু দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্টক ইয়ার্ডে বেসিক প্ল্যান্ট বসিয়ে বেইজ কোর্স এবং ওয়ারিং কোর্ট করার কথা থাকলেও তা মোটেও করা হয়নি। বিপরীতে, কাজ করা হচ্ছে, মিক্সার মেশিন দিয়ে। মাটি বাইরে থেকে এনে (ক্যারিং করে) রাস্তার পার্শ্ব বাঁধাই করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বিভিন্ন গাছের খুটি ও ময়লা-আবর্জনা দিয়ে করা হচ্ছে এ কাজ। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সরকারিভাবে সড়ক নির্মাণ কাজের তদারকিতে কেউ নেই, পাশাপাশি ঠিকাদারেরও কোন প্রকৌশলী নেই, শুধু শ্রমিক দিয়ে নির্মাণ কাজের তদারকি করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শ্রমিক এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সড়ক অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগের জন্য মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, অন্যান্য কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
উল্লেখ, ইস্কান্দার মির্জা শামীম লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার সড়ক বিভাগের অনেক কাজ করেছেন এবং এখনো করছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ঐসব কাজও নিম্নমানের করা হয়েছে এবং হচ্ছে। তার দাপটে প্রকৌশলীসহ কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন বেশ কয়েকজন ঠিকাদার। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, সড়ক অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন প্রকৌশলী ও কর্মকতা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় জনসাধারণ।