নিজস্ব প্রতিনিধি,রামগঞ্জ কন্ঠ,৩০মেঃলক্ষ্মীপুরে রায়পুরে পশ্চিম চরপাতা এলাকার গৃহবধু ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরণ ও লাশগুমের অভিযোগে শশুর বাড়ির লোকজনকে আসামী করে আদালতে মামলার ৭ মাস পর ওই গৃহবধুকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেশন (পিআইবি)।
রোববার সকালে ঢাকা সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে বিকেলে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জুয়েল দেব এর আদালতে হাজির করা হয়।
পরে আদালতে ওই গৃহবধু ১৬৪ ধারা জবানবন্দি প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরন ও তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়নি। সাতমাস পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, গৃহবধু বিথির স্বামী আবদুর রব চাকুরী সুবাধে ওমানে থাকেন। এ সুযোগে অন্য পুরুষের সাথে পরক্রীয়া জড়িয়ে পড়েন। এসব বিষয়ে একাধিকবার সামাজিকভাবে দুই পরিবারের মধ্যে শালিস বৈঠকও হয়। এর জের ধরে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিকেলে শশুরবাড়ি থেকে ইয়াসমিন আক্তার বিথি কাউকে কিছু না বলে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এরপরের দিন রায়পুর থানায় গৃহবধুর শশুর আবদুল কাদের একটি সাধারন ডায়েরী করেন।
ঘটনার একমাস পরে ১৯ নভেম্বর ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ( রায়পুর-১) আদালতে অপহরন, লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় শশুর আবদুল কাদের,শাশুড়ী খুকি বেগম, আবদুল কাদেরের মেয়ের জামাতা আক্তার হোসেন ও বিনু আক্তারসহ ৪জনকে। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টিগেশন (পিআইবি) নোয়াখালীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, শশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া ও তার মা হাসিনা আক্তার মিলে এ অপহরন ও লাশগুমের নাটক সাজিয়েছে। দীর্ঘ সাতমাস নানা হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও এ মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে আদালত প্রাঙ্গনে কান্নাজড়িত কন্ঠে আবদুর কাদের বলেন, কি অপরাধে অপহরন করে বিথিকে লাশগুমের মামলা দেয়া হয়েছে। এ মামলার কারনে দীর্ঘ সাত মাস ঘরে গুমাতে পারেনি। অর্থ ও সম্মানসব গেলো। এ ঘটনার পিছনে বিথির বাবা বাবুল, মা হাসিনা ও জেঠা সৈয়দ আহমদের ইন্ধনে এ মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে এ মামলা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।