শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রামগঞ্জে স্বাধীনতা দিবসে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা রামগঞ্জে ০৩ প্রতিষ্ঠানকে ১১হাজার টাকা জরিমানা রামগঞ্জে মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতি সভা রামগঞ্জ প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামগঞ্জ প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটি কে জেড ফোর্স কর্তৃক সংবর্ধনা ও ঈদ উপহার রামগঞ্জে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৫টি ট্রলি আটক রামগঞ্জে কোরআনে হাফেজদের মাঝে যুবলীগ নেতার রান্না করা খাবার বিতরন লক্ষ্মীপুরে ভিক্ষুকের কোলে ৬ মাসের শিশুকে রেখে, একটু আসি বলে ফেরেননি মা রামগঞ্জে মৎস্য চাষে বাঁধা, গ্রামপুলিশসহ আহত ৪ রামগঞ্জে নুরু বীজ ও বাবুল বীজ ভান্ডারে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সকলের সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে হবে: আনোয়ার খান এমপি রামগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত রামগঞ্জে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়লো দিনমজুরের বসতঘর বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে বরদাস্ত করা হবে না, ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি রামগঞ্জে শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের ১৪২তম শাখার উদ্বোধন রামগঞ্জে দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত রামগঞ্জে জয়পুরা এস আর এম এস উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত রামগঞ্জে বস্তাবন্দী মানুষের মাথার খুলি ও কঙ্কাল উদ্ধার রায়পুরে আ.লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত, আহত ১০ রামগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত



রামগঞ্জে অবৈধ দখল ও দূষণে অস্থিত্ব সংকটে বীরেন্দ্র খাল

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১
  • ৭৯৯ Time View
রামগঞ্জে বীরেন্দ্র খালটির অবৈধ দখল ও দূষণে অস্থিত্ব সংকটে

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগঞ্জঃ নব্বইরদশকেও রাজধানী ঢাকার সাথে লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলার বাণিজ্যিক যোগাযোগের সহজ মাধ্যম ছিলো বিরেন্দ্র খাল। দু’শ বছরের পুরোন এ খাল দিয়ে মেঘনা নদী হয়ে ছোট-বড় ট্রলারে পন্যসামগ্রী আনা-নেয়া করতো ব্যবসায়ীরা। প্রবাহমান পানি এখানকার কৃষি জমির সেচের কাজে ব্যবহার হতো। পরবর্তী সময় অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন হাট-বাজার ও আবাসিক এলাকার পতিত আবর্জনায় বন্ধ হয়ে আছে খালটি প্রবাহমান স্রোতধারা। এসব আবর্জনা পচে নষ্ট হয়ে গেছে পানি, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ও রোগবালাই। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিরেন্দ্র খালটি প্রায় দু’শ বছরের পুরোন। সর্বশেষ ১৯৪৭/৪৮ সালে একবার সংস্কারের পর কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি খালটি। লক্ষ্মীপুর রহমতখালি খালের সংযোগ থেকে শুরু হয়ে বিরেন্দ্র খালটি দু’টি শাখায় বিভক্ত হয়। এর একটি শাখা রামগঞ্জ হাজীগঞ্জ হয়ে চাঁদপুর মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে। অপর শাখা রামগঞ্জ হাজীগঞ্জ থেকে নোয়াখালী সোনাইমুড়ি হয়ে নদীতে প্রবাহিত হয়েছে। খালের অধিকাংশই রামগঞ্জ পৌরসভার বাজার ও আবাসাকি এলাকার পাশ দিয়ে ভয়ে গেছে। বিরেন্দ্র খালটির লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে। তবে খালটি নিয়ে উভয় বিভাগের মধ্যে জটিলতাও রয়েছে।

স্মৃতিচারণে কয়েকজন স্থানীয় বয়বৃদ্ধ জানান, একসময় ঢাকা থেকে মেঘনা নদী হয়ে ছোট বড় ট্রলারে করে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আনা নেয়া করতেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। রামগঞ্জ থানার সামনের ঘাটে ভিড়তো ট্রলারগুলো। এ খালটি দিয়ে কলাবাগান, মৌলভীবাজার ও সোনাপুর উত্তর বাজার এলাকায় সরকারিভাবে নির্মিত ঘাটে চাঁদপুর থেকে ট্রলারে করে আনা মালামাল নামানো হতো। বিরেন্দ্র খাল মালামাল পরিবহনের সহজতর মাধ্যম হওয়ায় উপজেলার সোনাপুর বাজারটি ‘রাজধানী’হিসাবে পরিচিত ছিল ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের কাছে। এছাড়াও কৃষি নির্ভর এ অঞ্চলের কৃষকরা এই খালের পানি দিয়ে সোনার ফসল ফলাতেন। নান্দনিক সৌন্দর্যের সে খালটি এখন অবহেলা-অনাদরে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে বিরেন্দ্র খাল অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, জেলা পরিষদ থেকে অস্থায়ী লীজ নেয়ার নাম করে প্রভাবশালী মহল খালের অধিকাংশই দখল করে নির্মাণ করেছেন স্থায়ী বহুতল ভবন ও দোকানপাট, বশতঘর ও ব্রিক ফিল্ড। এতে খালের প্রশস্ততা ও গভীরতা কমে পরিণত হয়েছে সরু ড্রেনে। অপরদিকে রামগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ও আবাসিক এলাকায় ড্রেনেজ ও ডাস্টবিন ব্যবস্থা নেই। ওইসব স্থানের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় খালটি ভাগারে পরিণত হয়েছে। এতে খালে পানির স্রোত বন্ধ হয়ে ও আবর্জনা পচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, সৃষ্টি হচ্ছে ডেঙ্গুসহ মশার উপদ্রোপ। এতে একদিকে বাড়ছে রোগবালাই, হুমকিতে রয়েছে পরিবেশ। সংস্কার আর খননের অভাবে বর্ষাকালেও আগের মতো পানি আসেনা এক সময়ের খরস্রোতা এ খালে। খালটি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন স্থানীয়রা।

রামগঞ্জ বাজার এলাকার খালপাড়ের বাসিন্দা তাহের আহমেদ ও জরুরা বেগম জানান, জেলা পরিষদ হয়তো পাড়ে ১০ ফুট জায়গা অস্থায়ী ভাবে লীজ দিতে পারে। তাই বলে খালের অধিকাংশই দখল করে স্থানীয় পাকা ভবন নির্মাণ করা কতটুকু যৌক্তিক? তাছাড়া পৌর বাজারের সব আবর্জান ফেলা হয় এ খালে। নেই কোন ডাস্টবিন! আবর্জনায় এমন স্তূপে পরিণত হয়েছে। খালের উপর দিয়ে হেটেই পারাপার হওয়া যায়। দেখে মনে হবে এটি খাল নয় পরিত্যক্ত একটি জমি। আবার কিছু অংশে ময়লা পচে সৃষ্টি হয়েছে দুর্গন্ধ আর ডেঙ্গু মশার বাসা। এ ডেঙ্গু মশার কামড়ে খালপাড়ের বাসিন্দা লোকমান ও তার দুই সন্তান ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলো।

এদিকে কৃষক আবুল হাসেম ও সাবুদ্দিন জানান, ইরি-বোরসহ কৃষি উৎপাদন কাজে এ খালের পানি ব্যবহার করা হতো। এতে কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদন হতো। কিন্তু বর্তমানে এখালের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। এতে পানিরে অভাবে অনেকেই কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়েছে। যারা করেছে তারাও ক্ষতিগ্রস্থ। তাই কৃষি বাঁচাতে খালটি সংস্কার জরুরী বলে জানান তারা।

রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল খায়ের পাটোয়ারী জানান, বিরেন্দ্র খালটির জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের। অবৈধ দখল উচ্ছেদের বিষয়ে তাদের চিঠি দেয়া হলেও সাড়া মেলেনি। তাছাড়া খালের যে পরিস্থিতি, একা সংষ্কার করা সম্ভব নয়। এ জন্য উপজেলা প্রশাসন, খাল সংস্কারকারি সংস্থা বিআরডি ও ওয়াবদ বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় খালটি পুনঃজীবিত করা সম্ভব। তাই সকলের সহযোগীতার দাবী জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা বলেন, বিষয়টি শুনেছি, নান্দনিক সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বিরেন্দ্র খাল। স্থানীয়রা চরম কষ্টে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট্য বিভাগগুলো দখল উচ্ছেদের বিষয়ে সহযোগীতা চাইলে সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে।



More News Of This Category



© All rights reserved © 2020 banglahost
Design & Developed by: ATOZ IT HOST
Tuhin